সাবলম্বী হতে মৌমাছি পালন

প্রকাশঃ জানুয়ারি ১৮, ২০১৫ সময়ঃ ৩:২৪ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৩:২৪ অপরাহ্ণ

মৌমাছি পালনডেস্ক নিউজ, প্রতিক্ষণ ডটকম:

অন্যান্য প্রাণীকে যেমন নিয়মিত খাদ্য সরবরাহ করতে হয়, মৌমাছির বেলায় তার কোনো প্রয়োজন নেই। মৌমাছি নিজেরাই নিজেদের খাদ্য সংগ্রহ করে থাকে। এদের খাদ্য ফুলের পরাগ রেণু এবং পুষ্পরস, যা তারা নিজেরা বিভিন্ন গাছ থেকে সংগ্রহ করে।মৌমাছি পুষ্পরস থেকে মধু উৎপাদন করে তা ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় করে রাখে। তাছাড়া নিজ দেহের অভ্যন্তরে রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় তৈরি করে মোম, যার দ্বারা চাক বা কুঠরি বানায়। এ কুঠরিগুলোতে মৌমাছির ডিম, শুককীট, মুককীট ইত্যাদি থাকে এবং সঞ্চিত মধু ও পরাগরেণু সংরক্ষণ করা হয়।

প্রকৃতিতে যখন ফুলের সমারোহ কম থাকে কিংবা ঝড়-বৃষ্টি ও শীতের আধিক্য পরিলক্ষিত হয়, সে সময় কলোনিতে খাদ্যাভাব দেখা দিলে কৃত্রিম খাদ্য সরবরাহের প্রয়োজন দেখা দেয়। এ সময় চিনি এবং পানি ১ঃ১ অনুপাতে মিশ্রিত করে মৌমাছিকে খাওয়াতে হয়। মৌচাকে মধু জমা করার পর তা মোম দ্বারা ঢেকে ফেলে। যখন চাকের অধিকাংশ কোষ মধুতে পূর্ণ হয় সে সময় মধু নিষ্কাশন যন্ত্রের সাহায্যে সাবধানে তা বের করে আনতে হয়।

মৌমাছি পালনে পরিচর্যা : সাফল্যের সঙ্গে মৌমাছি পালন করতে হলে নির্ধারিত সময় পর পর মৌ-কলোনির সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে পর্যবেক্ষণ, সমস্যা চিহ্নিতকরণ এবং তার সমাধানের ব্যবস্থা করা আবশ্যক। ঋতুভেদে এ পরিচর্যা ৭-১০ দিন পর পর করতে হয়। মৌমাছি পালনের ক্ষেত্রে সার্বক্ষণিক শ্রম দেয়ার প্রয়োজন নেই। সপ্তাহে একবার একটি মৌ-কলোনির জন্য মাত্র ৮-১০ মিনিট সময় ব্যয় করাই যথেষ্ট। এ জন্য অন্য যে কোন পেশার পাশাপাশি তা করা সম্ভব।

উপযুক্ত পরিবেশ তৈরী: মৌ-বাক্স রাখার জন্য নির্বাচিত স্থানটি ছায়াযুক্ত, শুকনা ও আশপাশে মৌমাছির খাদ্য সরবরাহের উপযোগী গাছ-গাছড়া দ্বারা পরিবেষ্টিত হওয়া আবশ্যক। প্রয়োজনে কিছু কিছু ঋতুভিত্তিক গাছ জরুরি ভিত্তিতে লাগানো যেতে পারে। নির্বাচিত স্থানের আশপাশে যেন বিকট শব্দ সৃষ্টিকারী এবং ধোঁয়া উৎপাদনকারী কোনো কিছু না থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

মৌমাছির শত্রু ও রোগ : মৌমাছির প্রধান শত্রু মথ পোকা। এছাড়া পিঁপড়া, তেলাপোকা, বোলতা, টিকটিকি, ইঁদুর, পাখি, ফড়িং, শিয়াল, কুনোব্যাঙ ইত্যাদির হাত থেকে মৌমাছিকে রক্ষার জন্য সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হয়। জীবজগতের অন্যান্য প্রাণীর মতো মৌমাছিও নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হতে পারে এবং এর ফলে মৌমাছির মৃত্যু হতে পারে। শুককীট এবং মুককীট অবস্থায় মৌমাছি বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া, ফাঙ্গাস এবং কীটাণু দ্বারা আক্রান্ত হয়ে থাকে। এছাড়া পূর্ণাঙ্গ মৌমাছি একারাইন, আমাশয়, ফাউলব্রুড, অবশতা ও ফাঙ্গাস প্রভৃতি রোগে আক্রান্ত হতে পারে। এসব রোগের নিরাময়কল্পে নির্ধারিত ওষুধ ব্যবহার করতে হয়।
মৌমাছি পালন প্রকল্প স্থাপনের জন্য আলাদাভাবে কোনো জায়গার প্রয়োজন হয় না। বাড়ির আনাচে-কানাচে, ঘরের বারান্দায়, ছাদে কিংবা বাগানেও মৌ-বাক্স রাখা যায়। অ্যাপিস সেরানা প্রজাতির ৫টি মৌ-কলোনি সম্বলিত মৌ-খামার স্থাপনের জন্য মোট বিনিয়োগ হবে ১৫-১৬ হাজার টাকা। প্রতিবছর গড়ে প্রতি বাক্স থেকে ১০ কেজি মধু পাওয়া যাবে, যার বাজারমূল্য ৩০০ টাকা হিসেবে ৩০০০ টাকা। প্রাথমিক বিনিয়োগ বক্স প্রতি দুই থেকে আড়াই হাজার টাকার পর আর কোনো বিনিয়োগ বা খরচ নেই বললেই চলে।

প্রতিক্ষণ/এডি/জয়

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য



আর্কাইভ

May 2024
S S M T W T F
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
25262728293031
20G